ইসালে সওয়াব | চল্লিশা মিলাদ | যিয়াফত কি জায়েজ? - ইসলামী তথ্যকোষ

শুক্রবার, ৬ নভেম্বর, ২০২০

demo-image

ইসালে সওয়াব | চল্লিশা মিলাদ | যিয়াফত কি জায়েজ?

কোন ব্যক্তি মারা গেলে মৃতব্যক্তির জন্য মিলাদ মাহফিলের আয়োজন, যিয়াফত বা কুলখানী যা চল্লিশা বাৎসরিক মিলাদ নামে পরিচিত, করা যাবে কিনা? কুলখানী করা জায়েজ আছে কিনা? মৃতব্যক্তির সওয়াবের উদ্দেশ্যে মিলাদ দেয়া যাবে কিনা? এসকল প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। অথচ, এগুলো মুস্তাহাব আমল, যদ্বারা মৃত ব্যক্তি উপকৃত হয়। মৃত ব্যক্তির জন্য মানুষ জমায়েত করে সদকা ও ইবাদতের মাধ্যমে সওয়াব রেসানী করা, দোয়া, ইস্তিগফার করা, খাবার আয়োজন করে খাওয়ানো কতটুকু সুন্নাহ সম্মত তা সরাসরি হাদিসের দলীল দিয়ে উল্লেখ করা হলো।

ziafat-milad

মৃতব্যক্তির পক্ষে সদকা করাঃ

حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ أَبِي مَرْيَمَ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، قَالَ أَخْبَرَنِي هِشَامٌ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ‏.‏ أَنَّ رَجُلاً، قَالَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ أُمِّي افْتُلِتَتْ نَفْسُهَا، وَأَظُنُّهَا لَوْ تَكَلَّمَتْ تَصَدَّقَتْ، فَهَلْ لَهَا أَجْرٌ إِنْ تَصَدَّقْتُ عَنْهَا قَالَ ‏ "‏ نَعَمْ ‏"‏‏.‏

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বললেন, আমার মায়ের আকস্মিক মৃত্যু ঘটে, কিন্তু আমার বিশ্বাস তিনি (মৃত্যুর পূর্বে) কথা বলতে সক্ষম হলে কিছু সদকা করে যেতেন। এখন আমি তাঁর পক্ষ হতে সদকা করলে তিনি এর প্রতিফল পাবেন কি? তিনি [নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)] বললেন, হ্যাঁ।

أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ، قَالَ: حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ هِشَامٍ، عَنْ قَتَادَةَ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيِّبِ، عَنْ سَعْدِ بْنِ عُبَادَةَ، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ أُمِّي مَاتَتْ أَفَأَتَصَدَّقُ عَنْهَا؟ قَالَ: «نَعَمْ»، قُلْتُ: فَأَيُّ الصَّدَقَةِ أَفْضَلُ؟ قَالَ: «سَقْيُ الْمَاءِ»
সা’দ ইব্‌ন উবাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি বললামঃ ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমার মাতা ইনতিকাল করেছেন, আমি কি তাঁর পক্ষ হতে সাদাকা করব? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি বললামঃ কোন্ সাদাকা উত্তম? তিনি বললেনঃ পানি পান করানো(-র ব্যবস্থা করা)।


মৃতব্যক্তির পক্ষে ইবাদতঃ

حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو عَوَانَةَ، عَنْ أَبِي بِشْرٍ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ جُبَيْرٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ امْرَأَةً، مِنْ جُهَيْنَةَ جَاءَتْ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ إِنَّ أُمِّي نَذَرَتْ أَنْ تَحُجَّ، فَلَمْ تَحُجَّ حَتَّى مَاتَتْ أَفَأَحُجُّ عَنْهَا قَالَ ‏ "‏ نَعَمْ‏.‏ حُجِّي عَنْهَا، أَرَأَيْتِ لَوْ كَانَ عَلَى أُمِّكِ دَيْنٌ أَكُنْتِ قَاضِيَةً اقْضُوا اللَّهَ، فَاللَّهُ أَحَقُّ بِالْوَفَاءِ ‏"‏‏.‏


ইব্‌নু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, জুহাইনা গোত্রের একজন মহিলা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- এর নিকট এসে বললেন, আমার আম্মা হাজ্জের মানৎ করেছিলেন তবে তিনি হজ্জ আদায় না করেই ইন্তিকাল করেছেন। আমি কি তাঁর পক্ষ হতে হজ্জ আদায় করতে পারি? আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তার পক্ষ হতে তুমি হজ্জ আদায় কর। তুমি এই ব্যাপারে কি মনে কর যদি তোমার আম্মার উপর ঋণ থাকত তা হলে কি তুমি তা আদায় করতে না? সুতরাং আল্লাহর হক আদায় করে দাও। কেননা আল্লাহ্‌র হকই বেশী আদায়যোগ্য।

পড়ুনঃ বুখারী, ১৮৫২


حَدَّثَنَا الْعَبَّاسُ بْنُ الْوَلِيدِ بْنِ مَزْيَدٍ، أَخْبَرَنِي أَبِي، حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي حَسَّانُ بْنُ عَطِيَّةَ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ الْعَاصَ بْنَ وَائِلٍ، أَوْصَى أَنْ يُعْتَقَ، عَنْهُ مِائَةُ رَقَبَةٍ فَأَعْتَقَ ابْنُهُ هِشَامٌ خَمْسِينَ رَقَبَةً فَأَرَادَ ابْنُهُ عَمْرٌو أَنْ يَعْتِقَ عَنْهُ الْخَمْسِينَ الْبَاقِيَةَ فَقَالَ حَتَّى أَسْأَلَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ أَبِي أَوْصَى بِعِتْقِ مِائَةِ رَقَبَةٍ وَإِنَّ هِشَامًا أَعْتَقَ عَنْهُ خَمْسِينَ وَبَقِيَتْ عَلَيْهِ خَمْسُونَ رَقَبَةً أَفَأُعْتِقُ عَنْهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ إِنَّهُ لَوْ كَانَ مُسْلِمًا فَأَعْتَقْتُمْ عَنْهُ أَوْ تَصَدَّقْتُمْ عَنْهُ أَوْ حَجَجْتُمْ عَنْهُ بَلَغَهُ ذَلِكَ ‏"‏ ‏.‏


আমর ইবনু শু’আইব (রহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার পিতা ও তার দাদার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

আল-আস ইবনু ওয়াইল তার পক্ষ হতে একশো গোলাম আযাদ করার ওসিয়াত করেন। তার এক ছেলে হিশাম পঞ্চাশটি গোলাম আযাদ করেন। পরে আরেক ছেলে ‘আমর (রাঃ) বাকি পঞ্চাশটি গোলাম আযাদ করার ইচ্ছা করেন। তিনি বিষয়টি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞেস করার মনস্থ করেন। অতঃপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে এসে তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা তার পক্ষ হতে একশো গোলাম আযাদ করার ওসিয়াত করে যান। হিশাম পঞ্চাশটি গোলাম আযাদ করেছে, এখনো পঞ্চাশটি আযাদ করা বাকি আছে। আমি কি তার পক্ষ হতে তা আযাদ করবো? রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ সে যদি মুসলিম হতো, তাহলে তোমরা তার পক্ষ হতে আযাদ করলে বা সদাক্বাহ করলে কিংবা হাজ্জ করলে তার কাছে এর সওয়াব পৌঁছতো

পড়ুনঃ আবু দাউদ, ২৮৮৩


মৃতব্যক্তির জন্য দুআ’ করা, ক্ষমা প্রার্থনা করাঃ

حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ إِدْرِيسَ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سُلَيْمَانَ، عَنْ أَسِيدِ بْنِ عَلِيِّ بْنِ عُبَيْدٍ، مَوْلَى بَنِي سَاعِدَةَ عَنْ أَبِيهِ، عَنْ أَبِي أُسَيْدٍ، مَالِكِ بْنِ رَبِيعَةَ قَالَ بَيْنَمَا نَحْنُ عِنْدَ النَّبِيِّ ـ صلى الله عليه وسلم ـ إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ مِنْ بَنِي سُلَيْمٍ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَبَقِيَ مِنْ بِرِّ أَبَوَىَّ شَىْءٌ أَبَرُّهُمَا بِهِ مِنْ بَعْدِ مَوْتِهِمَا قَالَ ‏ "‏ نَعَمْ الصَّلاَةُ عَلَيْهِمَا وَالاِسْتِغْفَارُ لَهُمَا وَإِيفَاءٌ بِعُهُودِهِمَا مِنْ بَعْدِ مَوْتِهِمَا وَإِكْرَامُ صَدِيقِهِمَا وَصِلَةُ الرَّحِمِ الَّتِي لاَ تُوصَلُ إِلاَّ بِهِمَا ‏"‏ ‏.‏

আবূ উসায়দ মালিক বিন রাবীআহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু আলিইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন সালামা গোত্রের এক ব্যক্তি তাঁর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আমার পিতা-মাতার মৃত্যুর পর তাদের সাথে সদাচারের কিছু অবশিষ্ট আছে কি, যা আমি তাদের সাথে করতে পারি? তিনি বলেনঃ হাঁ, তাদের জন্য দুআ’ করা, ক্ষমা প্রার্থনা করা, তাদের মৃত্যুর পর তাদের প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পালন করা, তাদের বন্ধুদের সম্মান করা এবং (অপরের সাথে) তাদের গড়ে তোলা সম্পর্ক উজ্জীবিত রাখা।
মিশকাত ৪৯৩৬।

মানুষকে খাওয়ানোঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَّامٍ قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ فُضَيْلِ بْنِ غَزْوَانَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ السَّائِبِ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «اعْبُدُوا الرَّحْمَنَ، وَأَطْعِمُوا الطَّعَامَ، وَأَفْشُوا السَّلَامَ، تَدْخُلُوا الْجِنَانَ»
আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা দয়াময় রহমানের ইবাদত করো, মানুষকে আহার করাও এবং সালামের বহুল প্রচলন করো, তাহলে জান্নাতসমূহে প্রবেশ করতে পারবে। -(তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, দারিমী, আহমাদ, ইবনে হিব্বান)


حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنْ أَبِي حَصِينٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏ "‏ مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلاَ يُؤْذِ جَارَهُ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ، وَمَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ ‏"‏‏.‏

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে লোক আল্লাহতে ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর যে লোক আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন মেহমানের সম্মান করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহতে ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে, নতুবা চুপ থাকে।(আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৯৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৯৩)

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেনঃ দারাজাত ও মর্যাদার স্তর বলতে বুঝায়ঃ সালামের প্রচার প্রসার ঘটানো, মানুষকে খাওয়ানো এবং রাতের অন্ধকারে মানুষ যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন থাকে তখন (তাহাজ্জুদ) নামায আদায় করা।


রাসুলুল্লাহর  আমল থেকে যিয়াফতঃ

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ الْعَلاَءِ، أَخْبَرَنَا ابْنُ إِدْرِيسَ، أَخْبَرَنَا عَاصِمُ بْنُ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ رَجُلٍ، مِنَ الأَنْصَارِ قَالَ خَرَجْنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي جَنَازَةٍ فَرَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَهُوَ عَلَى الْقَبْرِ يُوصِي الْحَافِرَ ‏"‏ أَوْسِعْ مِنْ قِبَلِ رِجْلَيْهِ أَوْسِعْ مِنْ قِبَلِ رَأْسِهِ ‏"‏ ‏.‏ فَلَمَّا رَجَعَ اسْتَقْبَلَهُ دَاعِيَ امْرَأَةٍ فَجَاءَ وَجِيءَ بِالطَّعَامِ فَوَضَعَ يَدَهُ ثُمَّ وَضَعَ الْقَوْمُ فَأَكَلُوا فَنَظَرَ آبَاؤُنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَلُوكُ لُقْمَةً فِي فَمِهِ ثُمَّ قَالَ ‏"‏ أَجِدُ لَحْمَ شَاةٍ أُخِذَتْ بِغَيْرِ إِذْنِ أَهْلِهَا ‏"‏ ‏.‏ فَأَرْسَلَتِ الْمَرْأَةُ قَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَرْسَلْتُ إِلَى الْبَقِيعِ يَشْتَرِي لِي شَاةً فَلَمْ أَجِدْ فَأَرْسَلْتُ إِلَى جَارٍ لِي قَدِ اشْتَرَى شَاةً أَنْ أَرْسِلْ إِلَىَّ بِهَا بِثَمَنِهَا فَلَمْ يُوجَدْ فَأَرْسَلْتُ إِلَى امْرَأَتِهِ فَأَرْسَلَتْ إِلَىَّ بِهَا ‏.‏ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏"‏ أَطْعِمِيهِ الأَسَارَى ‏"‏ ‏.‏

‘আসিম ইবনু কুলাইব (রহঃ) হতে তার পিতা থেকে (কুলাইব) গোত্রের জনৈক ব্যক্তির সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর সাথে এক ব্যক্তির জানাযায় অংশগ্রহণের জন্য রওয়ানা হলাম। আমি দেখলাম, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ক্ববরের কাছে দাঁড়িয়ে খননকারীকে নির্দেশ দিচ্ছেন : পায়ের দিকটা আরো প্রশস্ত করো, মাথার দিকটা আরো প্রশস্ত করো। তিনি সেখান থেকে ফিরতে উদ্যত হলে এক মহিলার পক্ষ হতে দাওয়াত দানকারী এসে তাঁকে স্বাগত জানালেন। তিনি তার বাড়িতে এলে খাবার উপস্থিত করা হলো। তিনি খেতে শুরু করলে অন্যরাও খাওয়া শুরু করলো। বর্ণনাকারী বলেন, আমাদের মুরব্বীরা লক্ষ্য করলেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) খাবারের একটি লোকমা মুখে তুলে তা নাড়াচাড়া করছেন। তিনি বললেনঃ আমার মনে হচ্ছে, বকরীর মালিকের অনুমতি ছাড়াই এটি নিয়ে আসা হয়েছে। মহিলাটি বললো, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমি একটি বকরী কিনতে বাকী’ নামক বাজারে লোক পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে বকরী পাওয়া যায়নি। অতঃপর আমার প্রতিবেশীর কাছে এই বলে লোক পাঠালাম যে, তুমি যে বকরীটি কিনেছো তা তোমার ক্রয়মূল্যে আমাকে দিয়ে দাও। কিন্তু তাকেও (বাড়িতে) পাওয়া যায় নি। আমি তার স্ত্রীর কাছে লোক পাঠালে সে বকরীটা পাঠিয়ে দেয়। একথা শুনে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ এ গোশত বন্দীদেরকে খাওয়াও।

আহকামুল জানায়িয (১৪৩-১৪৪)


حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا يَعْقُوبُ، - يَعْنِي الإِسْكَنْدَرَانِيَّ - عَنْ عَمْرٍو، عَنِ الْمُطَّلِبِ، عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ شَهِدْتُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الأَضْحَى بِالْمُصَلَّى فَلَمَّا قَضَى خُطْبَتَهُ نَزَلَ مِنْ مِنْبَرِهِ وَأُتِيَ بِكَبْشٍ فَذَبَحَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِيَدِهِ وَقَالَ ‏ "‏ بِسْمِ اللَّهِ وَاللَّهُ أَكْبَرُ هَذَا عَنِّي وَعَمَّنْ لَمْ يُضَحِّ مِنْ أُمَّتِي ‏"‏ ‏.‏

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ঈদুল আযহার দিন আমি রসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাথে ঈদগাহে উপস্থিত ছিলাম। তিনি খুত্ববাহ শেষে মিম্বার থেকে নামলেন। একটি বকরী আনা হলো। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজ হাতে যাবাহ করেন এবং বলেনঃ “আল্লাহর নামে শুরু করছি, আল্লাহ মহান। এই কুরবানী আমার ও আমার উম্মাতের যারা কুরবানী করতে অক্ষম তাদের পক্ষ হতে।”