প্রশ্ন :– কবর পাকা, কবরের উপরে গিলাফ ছড়ানো ও মাজারের উপরে গম্বুজ তৈরী করা নিয়ে বহু উলামায়ে কেরামগনের মধ্যে অনেক আলোচনা ও সমালোচনা শুনা যায় | কেউ কেউ বলেন জায়েজ আবার কেউ কেউ বলেন হারাম ! এটা নিয়ে মাঝখানে আমরা সাধারন মানুষেরা বড়ই বিপাকে আছি ! আসলে কোনটা সঠিক ? দলিলসহ জানালে খুবই কৃতার্থ হব !!!
উত্তর :-
বর্তমান সময়ে কবর পাকার বিষয় নিয়ে বহু ওলামায়ে কেরামগনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে | কেউ কেউ বলেন জায়েজ আবার কেউ কেউ বলেন নাজায়েজ বা বিদআত ! তাই, আমরা বিতর্কে না জড়িয়ে সর্বপ্রথম আমরা আগে দেখব নূর নবীজী (সা:) এ ব্যাপারে কিরূপ আমল করতে নির্দেশ দিয়েছেন |
বর্তমান সময়ে কবর পাকার বিষয় নিয়ে বহু ওলামায়ে কেরামগনের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যাচ্ছে | কেউ কেউ বলেন জায়েজ আবার কেউ কেউ বলেন নাজায়েজ বা বিদআত ! তাই, আমরা বিতর্কে না জড়িয়ে সর্বপ্রথম আমরা আগে দেখব নূর নবীজী (সা:) এ ব্যাপারে কিরূপ আমল করতে নির্দেশ দিয়েছেন |
নূর নবীজী (সা:) এর অসংখ্য সহীহ হাদিস শরীফ সমূহ থেকে জানা যায় আল্লাহর মু`মিন বান্দাহগনের কবর পাকা করা জায়েজ ও মুস্তাহাব | বহু শক্তিশালী সনদের হাদীস শরীফ থেকে নূর নবীজী (সা:) এবং সাহাবায়ে কেরামগন এরূপ কবর পাকা করেছেন বলে প্রমান পাওয়া যায় | নূর নবীজী (সা:) ও সাহাবায়ে কেরামগনের যমানায় কবরকে সামান্য উঁচু করার প্রচলন ছিল | এমনকি সাহাবায়ে কেরামগনের যুগেই স্বয়ং নূর নবীজী (সা:) এর রওজা মুবারাক, হযরত আবু বকর সিদ্দীক(রা:) ও হযরত উমার (রা:) এর মাজার শরীফদ্বয় উঁচু ছিল |
যেমন, এ সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে –
عن القا بن محمد قل : دخلت علی عا ءشۃ: يا اماه اكشفي لي عن قبر النبي صلی ﷲ عليه وسلم وصا حبيه فكشفت لي عن ثلاثۃ قبورلا مشرفۃ ولا لاطءۃ مبطوحۃ ببطحاء العرصۃ الحمراء ,
হযরত কাশিম (রা:) বর্ননা করেন,একদা আমি মা আয়েশা (রা:) এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম,ওহে মা ! আপনি আমার জন্য রাসূল (সা:) ও তার দুই সাহাবীর মাজারদ্বয় উন্মোচন করুন এবং তিনি তাই করলেন | আমি দেখি ঐ কবর শরীফগুলো বেশী উঁচুও ছিল না আবার নিচুও ছিল না | কবর গুলোর উপর ময়দানের লাল কাকর ছড়ানো ছিল | `
( সুনানে আবী দাউদ,হাদিস নং-3225,মুস্তাদরাকে হাকেম,হাদিস নং-1368, ইমামবাগভী:শরহে সুন্নাহ,5ম খন্ড, 402 পৃষ্ঠা, ইমাম বায়হাকী:সুনানে কুবরা,হাদিস নং-6758,মেশকাত শরীফ,149 পৃষ্ঠা হাদিস নং-1712,ইমাম মোল্লা আলী কারী;মেরকাত শরহে মেশকাত,4র্থ খন্ড, 169 পৃষ্ঠা,আশিয়াতুল লুময়াত : ইমাম যায়লায়ী:নাছবুর রায়া,2য় খন্ড, 304 পৃষ্ঠা )
এই হাদিস সম্পর্কে ইমাম হাকেম ও ইমাম যাহাবী (রহ:)
বলেন,
বলেন,
هذا حديث صحيح اءاسناد
–
ইমাম বায়হাকী (রহ;) বলেন,
–
এই হাদিসের সনদ সহীহ |
( মুস্তাদরাকে হাকেম,হাদিস নং-1368)ইমাম বায়হাকী (রহ;) বলেন,
وقال البيهقي حديث القاسم بن محمد في هذا الباب اصح,
–
ইমাম বায়হাকী (রহ:) বলেন,এ বিষয়ে কাশেম ইবনে মুহাম্মাদ (রহ;) এর রেওয়ায়েতটি সহীহ |
( মুহাররার ফিল হাদিস, 546 নং হাদিস )
সুতরাং, এই হাদিস সর্বসম্মতিক্রমে সহীহ | অতএব,এই হাদিস দ্বারা প্রমানিত হয়, কবরের উপর কাকর বা কংক্রিট ব্যবহার করা জায়েজ | কারন, এরূপ ময়দানের লাল কংক্রিট বা কাকর স্বয়ং নূর নবীজী (সা:) সহ হযরত আবু বকর( রা:) ও হযরত উমর (রা:)
এর মাজারত্রয়ে ব্যবহার করা হয়েছে |
এর মাজারত্রয়ে ব্যবহার করা হয়েছে |
এ সমন্ধে আরেকটি রেওয়ায়েত লক্ষ করুন,
وعن جعفر بن محمد عن ابيه مرسلا ان النبي صلی ﷲ عليه وسلم حثا علی الميت ثلاث حثيات بيديه جمعيعا وانه رش علی قبر ابنه ابرهيم ووضع عليه حصباء,
হযরত জাফর ইবনে মুহাম্মাদ তার পিতা হতে বর্ননা করেন,নবী কারীম (সা:) এক কবরের উপর মুঠ করে পানি ছিটিয়েছেন এবং ঐ কবরের উপর কাকর(কংক্রিট) স্থাপন করেছেন | `
( ইমাম বাগভী: শরহে সুন্নাহ,হা:নং-1515 ; মুসনাদে শাফেয়ী,1ম খন্ড, 360 পৃষ্ঠা ; মেশকাত শরীফ,148 পৃষ্ঠা:; ইমাম মোল্লা আলী কারী : মেরকাত শরহে মেশকাত, 4র্থ খন্ড, 165 পৃষ্ঠা )
বর্ননাকারী তাবেঈ নির্ভরযোগ্য হলে সর্বসম্মতিক্রমে মুরছাল হাদিস হুজ্জত বা দলিল হয় | এই হাদিস দ্বারা প্রমানিত হয় যে, সম্মানিত ব্যক্তির কবরের উপর কাকর বা কাকরের কংক্রিট ব্যবহার করা স্বয়ং নূর নবীজী (সা:) এর সুন্নত | কারন,নূর নবীজী (সা:) তিনি নিজেই তার পুত্র হযরত ইব্রাহিম (রা:)এর মাজারের উপর এরূপ কংক্রিট ব্যবহার করেছেন |
আল্লামা আলাউদ্দিন কাছানী হানাফী (রহ:) উল্লেখ করেন,
عن سعيد بن العاص انه قل اجعلوا علی قبري اللبن والقصب , كما جعل علی قبر رسولﷲ صلیﷲعليه وسلم وقبر ابي بكر وقبر عمر
হযরত সাদ ইবনে আস (রা:) বর্ননা করেন, নিশ্চয়ই তিনি বলেছেন,`তোমারা আমার কবরে কাঁচা ইট স্থাপন করবে,যেমনিভাবে রাসূল (সা:),হযরত আবু বকর ও উমর(রা:)এর মাজারত্রয়ে দেওয়া হয়েছে | `
( ইমাম কাছানী : কিতাবুল বাদাউছ ছানায়ে, 2য় খন্ড, 61 পৃষ্ঠা )
এই হাদিস দ্বারা প্রমানিত হয়, নূর নবীজী(সা:),হযরত আবু বকর সিদ্দীক( রা:), হযরত উমর( রা:) এবং হযরত সাদ ইবনে আস (রা:) প্রমূখ সাহাবায়ে কেরামগন তাদের মাজার শরীফ পাকা করেছেন বা পাকা করার পক্ষে ছিলেন | সুতরাং, হক্কানী ব্যক্তিগনের কবর পাকা করা সাহাবায়ে কেরামগনের সুন্নত | এমনকি স্বয়ং আল্লাহর রাসূল (সা:) তিনি নিজে তার পুত্র হযরত ইব্রাহিম( রা:) এর মাজারে ময়দানের কাকর স্থাপন করেছেন | তাই,ইহা নূর নবীজীর সুন্নতও বটে |
নূর নবীজী (সা:) এর পাশাপাশি হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা:) ও হযরত উমর (রা:) এর কবরদ্বয়ও পাকা করা ছিল এবং আজও পর্যন্ত আছে | সুতরাং, খাস ব্যক্তিগনের জন্য ইহা একটি উত্তম কাজ |
নূর নবীজী (সা:) এর পাশাপাশি হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রা:) ও হযরত উমর (রা:) এর কবরদ্বয়ও পাকা করা ছিল এবং আজও পর্যন্ত আছে | সুতরাং, খাস ব্যক্তিগনের জন্য ইহা একটি উত্তম কাজ |
মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আ`লামীন আমাদের সবাইকে সহীহ সুন্নাহ মোতাবেক চলার এবং আমল করার তৌফিক দান করুন |
২টি মন্তব্য:
এসব ভন্ডামি বন্ধ করুন। অনেক বছর বাদে তুর্কিরা এসে রাসুল সাঃ এর কবর পাকা করে।
এগুলো হাদিস। আবু দাউদ সহ অন্যান্য হাদিসের কিতাবগুলিতে এসেছে। অস্বীকার করার সুযোগ নেই। তুর্কি উসমানী খিলাফত তো আসছে বহু পরে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন