ইবনে আরাবী রহঃ এবং মুজাদ্দেদ আলফেসানি রাঃ এর মধ্যকার মতপার্থক্য প্রসঙ্গে - ইসলামী তথ্যকোষ

শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২০

ইবনে আরাবী রহঃ এবং মুজাদ্দেদ আলফেসানি রাঃ এর মধ্যকার মতপার্থক্য প্রসঙ্গে


মহীউদ্দীন ইবনুল আরাবী রহঃ বিরুদ্ধে সবচেয়ে স্ট্রং কলম চালিয়েছেন আহমেদ সেরহিন্দ মুজাদ্দেদ আলফেসানি রাঃ। কারন কি জানেন প্রিয় দ্বীনি ভাই? ইবন আরাবি রহঃ হালের মধ্যে বসে এমন কিছু কথা বলেছেন, যা বাস্তবে সাধারণ মানুষের জন্য গোমরাহি - যেমন সর্বশ্বেরবাদ। অর্থাৎ সর্বত্র তিনিই তিনি। এটা একটা মারাত্মক মাদকতাপুর্ন এক হাল। যা সকল সালেক কোনও না কোনও সময়ে প্রতক্ষ্য করে। অর্থাৎ সে সর্বত্র রব কে অনুভব করে।
কিছু কথা আছে - যেটা ক্লাসরুমে আলোচনা করা যায়, মাঠে ময়দানে নয়। কিছু আলোচনা আছে বেডরুমে করতে হয়, অন্যত্র নয়, কিছু আলোচনা আছে ড্রয়িংরুমেই শুধু করা যায়। তেমন কিছু হাল আছে -যেটা প্রচারণার বিষয় নয়। এই হাল যা আমরা ওহদাতুল ওজুদ নামে চিনি আম জনগনের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। খুবই ভয়াবহ ফিৎনা। সুফিরা গনহারে শির্কের উপযুক্ত ফতোয়াতে ধরা খাচ্ছিলো। মুজাদ্দিদ আলফেসানি রাঃ এই ফিৎনা থেকে সুফিদের কে আল্লাহর মেহেরবানীতে বের করে আনেন। তিনি ওহদাতুল ওজুদ কে সংস্কার সাধন করে ওয়াজিবুল ওজুদ স্থাপন করেন। অর্থাৎ মুনসুর হাল্লাজ রহঃ যে হালে এসে আনাল হক্ক শব্দ উচ্চারণ করেছিলেন, বা সর্বত্র হক্ক কে প্রতক্ষ্য করেছিলেন, সেই মাকামে ছাত্ররা এরুপ কথা স্পষ্ট মনে রাখবেন যে, সর্বত্র তিনি নন, বরং সবকিছুর মুলে তিনি। সবকিছু তার অতি নিকটে।
মুজাদ্দিদ আলফেসানি রাঃ ইবনে আরাবি কে বরেন্য বুজুর্গ মানতেন। কিন্তু তার হাল কে জনগণের জন্য ক্ষতিকর জেনে -এগ্রেসিভ রোল নিতে বাধ্য হয়েছেন (এই মর্মে তার বক্তব্য পাওয়া যায়)।
হালের বশবর্তী হয়ে ওহদাতুল ওজুদ কে বা আনাল হক্ক উচ্চারণ বা সাধকের এই ধরনের আচরণ, ইজতিহাদি ভুলের ন্যায় - এটির জন্য তিনি ইনশাআল্লাহ পাকড়াও হবেন না। কিন্তু, সাধারণ মানুষ যদি হালের বাইরে দাড়িয়ে - এ সকল কথা ধারণা করে- প্রচারণা করে, তবে তা স্পষ্ট ভ্রষ্টাচার হবে ।
কারন, সূরা ফুসসিলাত ৪১ঃ৫৩
"এখন আমি তাদেরকে আমার নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করাব পৃথিবীর দিগন্তে এবং তাদের নিজেদের মধ্যে;ফলে তাদের কাছে ফুটে উঠবে যে, তিনিই পরম সত্য। আপনার পালনকর্তা সর্ববিষয়ে সাক্ষ্যদাতা, এটা কি যথেষ্ট নয়?"

সূরা আজ জারিয়াত 51:20
"বিশ্বাসকারীদের জন্যে পৃথিবীতে নিদর্শনাবলী রয়েছে,"
51:21

এই আয়াত গুলোর বিশেষ বিশেষ জনের উপর খাস খাস অর্থ প্রকশিত হতেই পারে। কিন্তু আম মজলিসে খাস আলাপ তো চলতেই পারে না। আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আকিদা হলো, আল্লাহ কোনও কিছুর মাঝে প্রবেশ করে না, এবং কোনও কিছু আল্লাহর মাঝে প্রবেশ করে না। এখানে আছে শুধু নৈকট্য। এই নৈকট্য কে যখন প্রেমের উন্মাদনাতে প্রেমিকের কাছে ভিন্ন অর্থ প্রকাশিত হয়। হালের বশবর্তী হয়ে প্রকাশিত অর্থ এবং আক্ষরিক অর্থ একাকার হয়ে মুল অর্থ সরে যাচ্ছে। সুতরাং, সালাফি নজদিদের ফতোয়া বাজির স্থান এখানে থাকছে না। থাকছে শুধু সাধকদের নির্মল ভালোবাসা এবং আত্মিক স্বচ্চতা-সতর্কতা।

Kutbuddin Mujaddedi

কোন মন্তব্য নেই: